প্রশ্ন
আমি বিভিন্ন বইয়ে পড়েছি যে, ইফতারের আগে দোয়া কবুল হয়ে থাকে। আমি মেসে থেকে পড়াশোনা করি। আমরা যারা মেসে থাকি তারা সকলেই ইফতারের আগ মুহূর্তে সম্মিলিতভাবে মোনাজাত করে থাকি। কিছুদিন আগে এক ভাই বললেন, সম্মিলিত মোনাজাত করা বিদআত। আমি জানতে চাচ্ছি, ঐ ভাইয়ের বক্তব্য কি সঠিক? সম্মিলিতভাবে মোনাজাত করা কি বিদআত?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
ইফতারের আগে রোজাদারের দোয়া কবুল করা হয়। হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন,
إِنَّ لِلصَّائِمِ عِنْدَ فِطْرِهِ لَدَعْوَةً مَا تُرَدُّ
‘ইফতারের সময় রোজাদারের অবশ্যই একটি দোয়া আছে, যা রদ হয় না (কবুল হয়)।’ [সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১৭৫৩]
এই দোয়া এককভাবেও হতে পারে, আবার সম্মিলিতভাবেও হতে পারে। সম্মিলিতভাবে দোয়া করা যে বৈধ, সে বিষয়টি হাদিসের মাঝে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত রয়েছে। হাদিস শরিফে এসেছে,
عَنْ حَبِيبِ بن مَسْلَمَةَ الْفِهْرِيُّ وَكَانَ مُسْتَجَابًا أَنَّهُ أُمِّرَ عَلَى جَيْشٍ فَدَرَّبَ الدُّرُوبَ، فَلَمَّا لَقِيَ الْعَدُوَّ، قَالَ لِلنَّاسِ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ : لا يَجْتَمِعُ مَلأٌ فَيَدْعُو بَعْضُهُمْ وَيُؤَمِّنُ سَائِرُهُمْ إِلا أَجَابَهُمُ اللَّهُ
‘হাবীব ইবনে মাসলামা আলফিহরী (রা.), যিনি বড় ‘মুস্তাজাবুদ দাওয়াহ’ ছিলেন, একবার তাকে একটি বাহিনীর আমীর নিযুক্ত করা হয়। তিনি যুদ্ধের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সমাপ্ত করার পর যখন যুদ্ধের সময় নিকটবর্তী হল তখন সহযোদ্ধাদের লক্ষ্য করে বললেন, আমি রাসূল (সা.)-কে বলতে শুনেছি যে, কিছু মানুষ যখন কোথাও একত্র হয়ে এভাবে দোয়া করে যে, একজন দোয়া করে এবং অন্যরা আমীন বলে তো আল্লাহ তাআলা অবশ্যই তাদের দোয়া কবুল করেন।’ [মুজামে কাবীর, তাবরানী ৪/২৬; মুসতাদরাকে হাকেম ৩/৩৪৭]
কাজেই ইফতারের আগ মুহূর্তে সম্মিলিত দোয়াকে বিদআত বলার সুযোগ নেই। সুতরাং আপনার সেই ভাইয়ের বক্তব্য সঠিক নয়।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم