প্রশ্ন
আমাদের এলাকার এক ব্যক্তি দাবি করে থাকে যে, সে নাকি জ্বিনের সাথে কথা বলে। আমার প্রশ্ন হল, মানুষ কি জ্বিনের সাথে কথা বলতে পারে?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
জ্বিনের সাথে কথা বলা সম্ভব। রাসূল (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম থেকে জ্বিনদের সাথে কথা বলার ঘটনা বর্ণিত আছে। হাদিস শরিফে এসেছে,
أَنَّهُ كَانَ لَهُمْ جُرْنٌ فِيهِ تَمْرٌ، وَكَانَ أُبَيٌّ يَتَعَاهَدُهُ فَوَجَدَهُ يَنْقُصُ، فَحَرَسَهُ فَإِذَا هُوَ بِدَابَّةٍ تُشْبِهُ الْغُلَامَ الْمُحْتَلِمَ، قَالَ: فَسَلَّمَتْ فَرَدَّ السَّلَامَ، فَقُلْتُ: مَنْ أَنْتَ، أَجِنٌّ أَمْ إِنْسٌ؟ قَالَ: جِنٌّ، قَالَ: فَنَاوِلْنِي يَدَكَ، فَنَاوَلَنِي يَدَهُ، فَإِذَا يَدُ كَلْبٍ وَشَعْرُ كَلْبٍ، قَالَ: هَكَذَا خَلْقُ الْجِنِّ، قَالَ: لَقَدْ عَلِمْتَ الْجِنَّ، مَا فِيهِمْ أَشَدُّ مِنِّي، قَالَ لَهُ أُبَيٌّ: مَا حَمَلَكَ عَلَى مَا صَنَعْتَ؟ قَالَ: بَلَغَنَا أَنَّكَ رَجُلٌ تُحِبُّ الصَّدَقَةَ فَأَحْبَبْنَا أَنْ نُصِيبَ مِنْ طَعَامِكَ، قَالَ أُبَيٌّ: فَمَا الَّذِي يُجِيرُنَا مِنْكُمْ؟ قَالَ: هَذِهِ الْآيَةُ آيَةُ الْكُرْسِيِّ، ثُمَّ غَدَا أُبَيٌّ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَخْبَرَهُ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: صَدَقَ الْخَبِيثُ
‘উবাই ইবনে কাব (রা.) থেকে বর্ণিত, তার কাছে এক মশক খেজুর ছিল। সেগুলো তিনি যথেষ্ট হেফাজতে রাখতেন। কিন্তু তারপরও তা ক্রমশ কমে যাচ্ছিল। একরাতে তিনি সেই খেজুর পাহারা দিতে থাকেন। এমন সময় তার কাছে একটি প্রাণি আসে, যার আকৃতি সদ্য প্রাপ্তবয়স্ক ছেলের মত। তিনি বলেন, আমি তাকে সালাম দিলে সে সালামের জবাব দেয়। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, তুমি কে? জ্বিন না মানুষ? সে জবাব দিল, জ্বিন। আমি বললাম, তোমার হাত দেখাও। সে তার হাত আমাকে দেখাল। আমি দেখতে পেলাম কুকুরের হাত ও কুকুরের লোমের মত তার হাত। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, জ্বিনরা জন্ম থেকেই কি এমন হয়? সে বলল, আপনি জানেন, জ্বিনদের মাঝে আমার চেয়েও শক্তিশালী জ্বিন রয়েছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, কে তোমাকে এ কাজে বাধ্য করেছে? সে বলল, আমি জানি আপনি দান করতে পছন্দ করেন। তাই আপনার খাদ্য থেকে আমিও কিছু খাদ্য নিতে চাইলাম।
এরপর উবাই (রা.) বললেন, কোন আমলের মাধ্যমে তোমাদের অনিষ্ট থেকে বেঁচে থাকা যাবে? সে বলল, আয়াতুল কুরসী। পরের দিন সকালে উবাই (রা.) রাসূল (সা.)-কে সব কিছু খুলে বললে রাসূল (সা.) বলেন, খবীস তোমাকে সত্য কথা বলেছে।’ [সুনানে কুবরা, নাসাঈ, হাদিস: ১০৭৩০]
সুতরাং চেষ্টা তদবীর ছাড়াও জ্বিনদের সাথে মানুষের কথা হতে পারে। তবে এ কথাও স্মরণ রাখতে হবে যে, কেউ কোন দাবি করলেই সেটি সঠিক হয়ে যায় না।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم