প্রশ্ন
একটি হাদিসে পড়েছি, ঈমান বলা হয়, আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা, ফেরেশতাদের প্রতি ঈমান আনা, রাসূলদের প্রতি ঈমান আনা, শেষ দিবসের প্রতি ঈমান এবং ভাল-মন্দের তাকদীরের প্রতি ঈমান আনা। অথচ আরেক হাদিসে রাসূল (সা.) বলেছেন, ঈমানের সত্তরটিরও অধিক শাখা রয়েছে। এই দুই হাদিসের মাঝে কিভাবে সমন্বয় সাধন করা যেতে পারে?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
প্রশ্নে বর্ণিত হাদিস দু’টি উল্লেখ করা হচ্ছে। প্রথম হাদিসটি হল, জিবরীল (আ.) রাসূল (সা.)-কে ঈমান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি উত্তর দিয়েছিলেন,
أَنْ تُؤْمِنَ بِاللَّهِ وَمَلاَئِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ وَتُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِ
‘ঈমান হল আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি, তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি, তাঁর রাসূলগণের প্রতি এবং আখিরাতের প্রতি ঈমান আনবে, আর তাকদিরের ভালমন্দের প্রতি ঈমান রাখবে।’ [সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১]
আর দ্বিতীয় হাদিসটি হল, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন,
الإِيمَانُ بِضْعٌ وَسَبْعُونَ شُعْبَةً
‘ঈমানের শাখা সত্তরটিরও কিছু বেশি।’ [সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৫৯]
এই দুই হাদিসের মাঝে এভাবে সমন্বয় সাধন হবে যে, প্রথম হাদিসে ঐ ঈমানের কথা বলা হয়েছে যা আকীদা সংশ্লিষ্ট। ইসলামি আকীদার মূল ভিত্তিই হল এই ছয়টি বিষয়ের উপর।
আর দ্বিতীয় হাদিসে ঐ ঈমানের কথা বলা হয়েছে যা আমল সংশ্লিষ্ট। এই ঈমানের শাখা সত্তরের অধিক। যেমন, নামাজ ঈমানের একটি শাখা। কুরআন মাজিদে নামাজকে ঈমান বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে,
وَمَا كَانَ اللَّهُ لِيُضِيعَ إِيمَانَكُمْ
মুফাসসিরগণ এ ব্যাপারে একমত যে, আয়াতে ঈমান দ্বারা নামাজ উদ্দেশ্য নেওয়া হয়েছে। [তাফসীরে কুরতুবী ২/১৫৭]
অনুরূপভাবে লজ্জাও ঈমানের একটি শাখা। হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) বলেছেন,
وَالْحَيَاءُ شُعْبَةٌ مِنَ الإِيمَانِ
‘আর লজ্জাশীলতা ঈমানের একটি শাখা।’ [সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৫৯]
কাজেই এই দুই হাদিসের মাঝে কোনো বিরোধ নেই।
মাজমুউ ফাতওয়া শাইখ মুহাম্মদ বিন সালেহ আল-উছাইমীন ১/৫৪
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم