প্রশ্ন
আমার উপর একবার গোসল ফরজ ছিল। তখন আমি খাবার খেতে চাইলে আমার এক বন্ধু বলল, গোসল সেরে তারপর খাওয়া দাওয়া কর। কারণ গোসল ফরজ থাকা অবস্থায় কোনো কাজ করা ঠিক না। আমার প্রশ্ন হল, আমার উক্ত বন্ধুর কথা কি ঠিক?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
গোসল ফরজ থাকা অবস্থায় কুরআন তেলাওয়াত, মসজিদে প্রবেশ, নামাজ ও তাওয়াফ ছাড়া যেকোনো কাজ করা যাবে। শরিয়তের দৃষ্টিতে এতে কোনো সমস্যা নেই।
হাদিস শরিফে এসেছে,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم لَقِيَهُ فِي بَعْضِ طَرِيقِ الْمَدِينَةِ وَهْوَ جُنُبٌ، فَانْخَنَسْتُ مِنْهُ، فَذَهَبَ فَاغْتَسَلَ، ثُمَّ جَاءَ فَقَالَ ” أَيْنَ كُنْتَ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ ”. قَالَ كُنْتُ جُنُبًا، فَكَرِهْتُ أَنْ أُجَالِسَكَ وَأَنَا عَلَى غَيْرِ طَهَارَةٍ فَقَالَ سُبْحَانَ اللَّهِ، إِنَّ الْمُؤْمِنَ لاَ يَنْجُسُ
‘আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, তার সাথে মদীনার কোন এক পথে রাসূল (সা.)-এর দেখা হলো। আবু হুরায়রা (রা.) তখন নাপাক অবস্থায় ছিলেন। তিনি বলেন, আমি নিজেকে অপবিত্র মনে করে সরে পড়লাম। পরে আবু হুরায়রা (রা.) গোসল করে এলেন। পুনরায় সাক্ষাত হলে আল্লাহর রাসূল (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, ওহে আবু হুরায়রা! কোথায় ছিলে? আবু হুরায়রা (রা.) বললেন, আমি জানাবাতের অবস্থায় আপনার সঙ্গে বসা সমীচীন মনে করিনি। তিনি বললেন, সুবহানাল্লাহ্! মু’মিন অপবিত্র হয় না।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ২৮৩]
সুতরাং আপনার বন্ধুর কথা ঠিক নয়। বরং আপনার জন্য গোসল ফরজ থাকা অবস্থায় পানাহার করতে কোনো সমস্যা ছিল না। তবে এই অবস্থায় অন্যান্য কাজ বৈধ হলেও গোপনাঙ্গ ধুয়ে অজু করে নেওয়া উত্তম। কারণ হাদিস শরিফে এসেছে,
عن عائشة قالت : كان رسول الله صلى الله عليه وسلم إذا كان جنباً فأراد أن يأكل أو ينام توضأ وضوءه للصلاة
‘আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) জানাবাতের (গোসল ফরজ) অবস্থায় পানাহার কিংবা ঘুমানোর ইচ্ছা করলে নামাজের অজুর মত অজু করে নিতেন।’ [সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৩০৫]
তবে মনে রাখতে হবে, গোসল ফরজ হলে যথাসম্ভব দ্রুত গোসল করে নেওয়া উচিৎ। বিলম্ব না করা উচিৎ।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم