প্রশ্ন
বাইয়ে ঈনা কাকে বলে? ইসলামি শরিয়তে বাইয়ে ঈনার হুকুম কী?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
বাইয়ে ঈনার আভিধানিক অর্থ: ঈনা অর্থ বাকি। যেহেতু বাইয়ে ঈনাতে দুই দফা বেচাকেনা হয়ে থাকে যার একটি হয় নগদ আর অপরটি হয় বাকিতে, এই কারণে একে বাইয়ে ঈনা বলা হয়। অথবা ঈনা অর্থ কোনো বস্তু। যেহেতু বাইয়ে ঈনাতে একটি বস্তুকে মাধ্যম বানিয়ে বেচাকেনা করা হয়, তাই একে এ নামে নামকরণ করা হয়েছে।
পরিভাষায় বাইয়ে ঈনা: বিশিষ্ট হাদিস ব্যাখ্যাকার আল্লামা খলীল আহমাদ সাহারানপুরী (রহ.) বাইয়ে ঈনার সংজ্ঞা উল্লেখ করেছেন এভাবে:
‘বাইয়ে ঈনা বলা হয় নির্দিষ্ট মূল্যে কোনো নির্ধারিত সময় পর্যন্ত বাকিতে একটি বস্তু বিক্রি করে ফের বিক্রেতা প্রথম মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে বস্তুটি ক্রেতার কাছ থেকে নগদে ক্রয় করে নেওয়া।’ [বাজলুল মাজহুদ ৪/২৭৬]
এ ছাড়াও বাইয়ে ঈনার আরো কিছু সংজ্ঞা রয়েছে যেগুলোর সার সংক্ষেপ হলো, এটি পণ্য বিক্রয়ের ছুতা অবলম্বন করে মুনাফা অর্জনের একটি পদ্ধতি।
ইসলামি শরিয়তে বাইয়ে ঈনা জায়েয নেই। কারণ এতে ঋণ দিয়ে অতিরিক্ত মুনাফা গ্রহণ করা উদ্দেশ্য হয়ে থাকে।
হাদিস শরিফে এসেছে,
عن ابن عمر، قال: سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: إذا تبايعتم بالعينة وأخذتم أذناب البقر، ورضيتم بالزرع، وتركتم الجهاد، سلط الله عليكم ذلا لا ينزعه حتى ترجعوا إلى دينكم
‘ইবনে উমর (রা.) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, যখন তোমরা ঈনা পদ্ধতিতে ব্যবসা করবে, গরুর লেজ আঁকড়ে ধরবে, কৃষিকাজেই সন্তুষ্ট থাকবে এবং জিহাদ ছেড়ে দিবে তখন আল্লাহ তোমাদের উপর লাঞ্ছনা ও অপমান চাপিয়ে দিবেন। তোমরা তোমাদের দ্বীনে ফিরে না আসা পর্যন্ত আল্লাহ তোমাদেরকে এই অপমান থেকে মুক্তি দিবেন না।’ [সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৩৪৬২]
এই হাদিসের আলোকে ফুকাহায়ে কেরামগণ বলেছেন, বাইয়ে ঈনা জায়েয নেই।
ইলাউস সুনান ১৪/১৭৮; আননিহায়া ফী গারীবিল হাদীস ৩/৩৩৪
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم