প্রশ্ন
বর্তমানে বইসহ বিভিন্ন জিনিসের কপিরাইট বা মেধাস্বত্ব থাকে। শরিয়ত এ বিষয়টিকে সমর্থন করে কি?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
মানুষের যত অধিকার আছে, তন্মধ্যে কিছুর উৎস হলো শরিয়ত। মানুষের কল্যাণার্থে শরিয়ত সে সকল অধিকার রক্ষা করা মানুষের উপর আবশ্যক করে দিয়েছে। আর কিছু অধিকার এমন রয়েছে, যেগুলোর সৃষ্টি হয়েছে মানুষের সামাজিক প্রচলন ও ভালো চিন্তার স্বাভাবিক চাহিদা হিসেবে। এ ধরনের অধিকারের ক্ষেত্রে যদি শরয়ি কোনো সমস্যা না থাকে, তাহলে শরিয়তেও সেগুলো স্বীকৃত। তেমনি একটি অধিকার হলো কপিরাইট বা মেধাস্বত্ব। কারণ, একব্যক্তি প্রচুর কষ্ট-পরিশ্রম করে সৃজনশীল কোনো কাজ করে আর্থিক ফায়দা লাভের একটি সুযোগ সৃষ্টি করবে আর অন্য ব্যক্তি বিনাশ্রমে তা ভোগ করবে এবং প্রথম ব্যক্তিকে আর্থিক ফায়দা লাভ থেকে বঞ্চিত রাখবে, এই বিষয়টি সাধারণ বিবেকে বোধগম্য নয়। শরিয়তও এটিকে সমর্থন করে না। সুতরাং কপিরাইট বা মেধাস্বত্ব শরিয়ত স্বীকৃত একটি অধিকার।
আল্লাহ তাআলা কুরআন মাজিদে ইরশাদ করেন,
وَ الَّذِیۡن یُؤۡذُوۡنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ وَ الۡمُؤۡمِنٰتِ بِغَیۡرِ مَا اکۡتَسَبُوۡا فَقَدِ احۡتَمَلُوۡا بُہۡتَانًا وَّ اِثۡمًا مُّبِیۡنًا
‘আর যারা মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে কষ্ট দেয় তাদের কোনো অপরাধ ছাড়াই, তারা অপবাদের ও সুস্পষ্ট পাপের বোঝা বহন করে।’ [সূরা আহযাব, আয়াত: ৫৮]
রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন,
‘সেই প্রকৃত মুসলিম, যার জিহ্বা ও হাত হতে সকল মুসলিম নিরাপদ এবং সেই প্রকৃত মুহাজির, আল্লাহ যা নিষেধ করেছেন তা যে ত্যাগ করে।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ১০]
অন্য হাদিসে এসেছে,
أَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَبَايَعْتُهُ، فَقَالَ: مَنْ سَبَقَ إِلَى مَاءٍ لَمْ يَسْبِقْهُ إِلَيْهِ مُسْلِمٌ فَهُوَ لَهُ
‘আসমার ইবনে মুদাররিস (রা.)-এর সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূল (সা.)-এর কাছে এসে বাইআত নিলাম। তিনি বললেন, যে ব্যক্তি কোনো পানির উৎসের নিকট সর্বপ্রথম পৌঁছবে যার নিকট তার পূর্বে কোনো মুসলিম পৌঁছেনি, তা তার জন্য।’ [সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৩০৭১]
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم