প্রশ্ন
ইসলামের প্রাথমিক যুগে যুদ্ধাস্ত্র বলতে তলোয়ার, তীর, বর্শা, ঢাল ইত্যাদি বোঝানো হত। বিভিন্ন হাদিস থেকে তাই বোঝা যায়। কিন্তু বর্তমানে অনেক আধুনিক মারণাস্ত্রের আবিষ্কার হয়েছে। এখন আমার জানার বিষয় হলো, যুদ্ধক্ষেত্রে কি এগুলো ব্যবহার করা যাবে? এ ব্যাপারে ইসলাম কী বলে?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
কুরআন-হাদিসে যুদ্ধে শত্রুর মোকাবেলায় যথাসাধ্য শক্তি অর্জনের কথা বলা হয়েছে। চাই তা যে কোনো কিছুর মাধ্যমেই হোক না কেন। যেমন,
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেছেন,
وَأَعِدُّوا لَهُمْ مَا اسْتَطَعْتُمْ مِنْ قُوَّةٍ وَمِنْ رِبَاطِ الْخَيْلِ تُرْهِبُونَ بِهِ عَدُوَّ اللَّهِ وَعَدُوَّكُمْ وَآخَرِينَ مِنْ دُونِهِمْ لَا تَعْلَمُونَهُمُ اللَّهُ يَعْلَمُهُمْ وَمَا تُنْفِقُوا مِنْ شَيْءٍ فِي سَبِيلِ اللَّهِ يُوَفَّ إِلَيْكُمْ وَأَنْتُمْ لَا تُظْلَمُونَ
‘আর তাদের মুকাবিলার জন্য তোমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী শক্তি ও অশ্ব বাহিনী প্রস্তুত কর, তা দ্বারা তোমরা ভয় দেখাবে আল্লাহর শত্রু ও তোমাদের শত্রুদেরকে এবং এরা ছাড়া অন্যদেরকেও, যাদেরকে তোমরা জান না, আল্লাহ তাদেরকে জানেন। আর তোমরা যা আল্লাহর রাস্তায় খরচ কর, তা তোমাদেরকে পরিপূর্ণ দেয়া হবে, আর তোমাদেরকে যুলম করা হবে না।’[সূরা আনফাল, আয়াত: ৬০]
রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন,
عَنْ أَبِي عَلِيٍّ، : ثُمَامَةَ بْنِ شُفَىٍّ الْهَمْدَانِيِّ أَنَّهُ سَمِعَ عُقْبَةَ بْنَ عَامِرٍ الْجُهَنِيَّ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ عَلَى الْمِنْبَرِ يَقُولُ : ( وَأَعِدُّوا لَهُمْ مَا اسْتَطَعْتُمْ مِنْ قُوَّةٍ ) أَلاَ إِنَّ الْقُوَّةَ الرَّمْىُ، أَلاَ إِنَّ الْقُوَّةَ الرَّمْىُ، أَلاَ إِنَّ الْقُوَّةَ الرَّمْىُ
‘আবু আলী সুমামা ইবন শাফী আল্ হামাদানী হতে বর্ণিত, তিনি উকবা ইবন আমির আল্ জুহানী (রা.)-কে বলতে শুনেছেন, তিনি রাসূল (সা.) কে মিম্বরে দাঁড়িয়ে খুতবা দেয়ার সময় বলতে শুনেছেনঃ (পবিত্র কুরআনের নির্দেশ) ‘‘তোমরা শত্রুর মোকাবিলার জন্য সাধ্যমত শক্তি অর্জন কর’’ মনে রেখো, শক্তি অর্থ হল তীরবাজি। মনে রেখো, শক্তি অর্থ তীরবাজি। মনে রেখো, শক্তি অর্থ তীরবাজি’ [আবু দাউদ, হাদিস: ২৫০৬]
সে যুগে তীর ছিল অন্যতম যুদ্ধাস্ত্র, তাই রাসূল (সা.) তীর নিক্ষেপের কথা বলেছেন। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, আধুনিক সমরাস্ত্র এর অন্তর্ভুক্ত হবে না। তাই নিঃসন্দেহে বলা যায়, বর্তমানে সকল আধুনিক যুদ্ধাস্ত্র এই বিধানের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم