প্রশ্ন
আমরা ঢাকায় বসবাস করি। কিন্তু এক ফ্লাটের বাসিন্দাদের সাথে অন্য ফ্লাটের বাসিন্দাদের তেমন কোনো কথাবার্তা হয় না। অথচ আমি শুনেছি ইসলামে প্রতিবেশীর অনেক হক রয়েছে। আসলে এ ব্যাপারে ইসলাম কী বলে?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
ইসলামে রয়েছে পরিপূর্ণ জীবন-ব্যবস্থা। কেউ যদি ইসলামের পরিপূর্ণ বিধি-বিধান মেনে চলতে পারে তাহলে তার জীবন হয়ে উঠবে শান্তিময়।
ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো প্রতিবেশীর হক। যেহেতু একজন মানুষ বেশির ভাগ সময় তার আশেপাশের মানুষদের সাথেই চলাফেরা করে, তাদের সাথেই উঠাবসা করে তাই ইসলামে প্রতিবেশীর ব্যাপারে অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
কারণ একটি সমাজের সকলেই যদি প্রতিবেশীর হক রক্ষা করে তাহলে কারও সাথে কোনো প্রকার ঝগড়া-বিবাদ হবে না। সমাজের সকল কাজকর্ম সুন্দরভাবে এবং সুচারুরূপে বাস্তবায়িত হবে। তাই আল্লাহ তাআলা কুরআন মাজিদে বিশেষভাবে প্রতিবেশীর সাথে ভালো আচরণের নির্দেশ দিয়েছেন।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
‘তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর এবং কোনো কিছুকে তার সাথে শরিক করোনা। এবং পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, এতীম, অভাবগ্রস্থ, নিকট-প্রতিবেশী, দূরপ্রতিবেশী, সঙ্গী-সাথী, মুসাফির ও তোমাদের দাসদাসীদের সাথে ভালো ব্যবহার কর। নিশ্চয়আল্লাহ দাম্ভিক অহংকারীকে পছন্দকরেন না।’ [সূরা নিসা, আয়াত: ৩৬]
রাসূল (সা.) হাদিস শরিফে প্রতিবেশীর হককে গুরুত্বের সাথে উল্লেখ করেছেন।
এক হাদিসে এসেছে, হযরত ইবনে আববাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ঐ ব্যক্তি মুমিন নয় যে পেটপুরে খায় অথচ তার পাশের প্রতিবেশী না খেয়ে থাকে।’ [মুসনাদে আবু ইয়ালা, হাদীস ২৬৯৯]
আরেক হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘জিবরীল (আ.) আমাকে প্রতিবেশীর হকের ব্যাপারে এত বেশি তাকিদ করেছেন যে, আমার কাছে মনে হয়েছে প্রতিবেশীকে মিরাছের অংশিদার বানিয়ে দেয়া হবে।’ [সহিহ বুখারি,হাদিস: ৬০১৪; সহিহ মুসলিম, হাদিস:২৫২৪]
এ ধরনের আরও বহু হাদিস রাসূল (সা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে। তাই আমাদেরও প্রতিবেশীর হকের ব্যাপারে গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ। এমনকি যদি প্রতিবেশী অমুসলিমও হয়ে থাকে। কারণ হতে পারে ইসলামের এই সৌন্দর্য দেখেই সে ইসলাম গ্রহণ করে নিবে।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم