প্রশ্ন
নানা মারা যাওয়ার সময় অনেক সম্পদ রেখে যান। এখনো তা অবণ্টিত। আমার মামারা দুই ভাই। বড় মামা ঢাকায় থাকার কারণে গ্রামের জায়গা জমি দেখাশুনা করতে পারেন না। এদিকে ছোট মামা সব জমিতে চাষ করে নিজে একাই ভোগ করেন। গাছের ফল-ফলাদি সে একাই নেয়। এতদিন বড় মামা কিছু বলেননি। একদিন দু’জনের কথা কাটাকাটিতে বড় মামা বললেন, আমার দু’বছরের ৯০ আড়ি ধান, আর গাছের ফল-ফলাদির ৪০ হাজার টাকা দিয়ে দিতে হবে। ছোট মামা বলে, সবগুলো আমি দেখাশুনা করেছি। আপনি কিছু পাবেন না। পরবর্তীতে তারা দু’জনই অনুতপ্ত হয়। এখন তারা জানতে চাচ্ছে-
১. সব জমিতে ছোট মামার চাষ করাটা অন্যায় হলে এখন তার কী করতে হবে?
২. চাষের এক অংশ বড় মামাকে দিতে হবে কি না?
৩. ছোট মামা ফল-ফলাদি কিছু খেয়েছেন কিছু বিক্রি করেছেন। এ বিষয়ে কী করতে হবে?
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا و مصليا و مسلما
প্রশ্নের বিবরণ থেকে বোঝা যাচ্ছে, মনোমালিন্য হওয়ার আগে বড় ভাইয়ের মৌন সম্মতি ও সমঝোতার মাধ্যমেই ছোট ভাই চাষাবাদ ও বাগান দেখাশোনা করে আসছিল। ছোট জনের এসব কাজে বড় জনের কোনো আপত্তি ছিল না। এরপর কোনোদিন হয়ত রাগ হওয়ার কারণে আপনার বড় মামা ঐ কথাগুলো বলেছেন। তাই এতদিন যাবৎ উক্ত জমিগুলোতে আপনার ছোট মামার চাষ করাটা অন্যায় হয়নি। এবং এতদিন ছোট ভাই যেহেতু নিজেই চাষবাস করেছে, বড় ভাই তাতে কোনো অংশ দাবি করেনি তাই সব ফসলের মালিক সেই হবে। তবে যেদিন থেকে বড় ভাই আপত্তি করেছে সেদিনের পর থেকে চাষাবাদ করতে হলে হয় প্রত্যেকে নিজ নিজ অংশ ভাগ করে নিয়ে তাতে করবে, অন্যথায় বর্গা ইত্যাদি কোনো শরীয়তসম্মত পন্থায় করবে। এমনিভাবে জমিতে যদি ফলগাছ থাকে তাহলে তার ফলফলাদি সমানভাবে ভাগ করে নিবে।
উল্লেখ্য যে, মীরাসী সম্পত্তি যত দ্রুত সম্ভব বণ্টন করে নেওয়া শরীয়তের নির্দেশ। এ নির্দেশ পালন করলে এ ধরনের ঝগড়া-বিবাদে পড়ার আশংকা থাকে না।
-আলবাহরুর রায়েক ৫/১৬৭; মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়্যা, মাদ্দা ১০৭৬, ১০৮৯, ১০৮৬; রদ্দুল মুহতার ৪/৩০৪; শরহুল মাজাল্লা, খালেদ আতাসী ৪/১৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৭/৫১৪
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم