প্রশ্ন
আমি যেহেতু একজন ডাক্তার তাই প্রতিনিয়ত ঔষুধ কোম্পানিগুলো আমাকে কিছু ঔষধ শুভেচ্ছাস্বরূপ দিয়ে থাকে। প্রশ্ন হল, উক্ত ঔষধগুলো গ্রহণ করা যাবে কি না এবং তা বিক্রি করে টাকা ভোগ করা যাবে কি না? অনুগ্রহ করে মাসআলার সমাধান দিলে খুবই দয়া হয়। দ্বীনের উপর চলা আমার জন্য সহজ হয়। আল্লাহ আপনাকে উত্তম বিনিময় দান করুন।
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا و مصليا و مسلما
ওষুধ কোম্পানির পক্ষ থেকে চিকিৎসকদেরকে যেসকল ওষুধ দেওয়া হয় তা যদি এমন হয় যে, ওষুধটি সম্প্রতি বাজারে এসেছে এবং চিকিৎসককে এটি দেওয়ার উদ্দেশ্য হল, এই ওষুধের সাথে পরিচিতি এবং এর গুণগত মান ও কার্যকরিতা যাচাই করা তাহলে চিকিৎসকের জন্য ওষুধটি নেওয়া জায়েয হবে। এমন ওষুধ চিকিৎসক নিজেও ব্যবহার করতে পারবেন এবং নিজের পরিবারের লোকদেরকেও দিতে পারবেন। তেমনি অন্য যে কোনো রোগীকেও বিনামূল্যে দিতে পারবেন। কিন্তু এসব ওষুধ বিক্রি করে নিজে এর মূল্য ভোগ করা বৈধ হবে না।
আর উপরোক্ত প্রকারের ওষুধ ছাড়া আরো যেসব ওষুধ প্রস্তুতকারীগণ চিকিৎসকদেরকে দিয়ে থাকে, যেগুলো আগে থেকেই বাজারে চালু আছে এবং যেগুলোর ব্যাপারে নতুন করে অভিজ্ঞতা অর্জনের প্রয়োজন নেই- চিকিৎসকের জন্য এ ধরনের ওষুধ গ্রহণ করা জায়েয নয়। কেননা চিকিৎসকদেরকে তারা ওষুধগুলো আর্থিক সুবিধাস্বরূপ দিয়ে থাকে। যাতে করে চিকিৎসক রোগীদের ব্যবস্থাপত্রে তাদের ওষুধের নাম লেখেন। এজন্যই অনেক চিকিৎসকের চেম্বারের সামনেই দেখা যায়, রোগী চেম্বার থেকে বের হওয়ার পর ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিগণ ব্যবস্থাপত্র চেক করে দেখে যে, চিকিৎসক তাদের ওষুধের নাম লিখেছেন কি না। এ থেকে সুস্পষ্ট হয় যে, এটি শরীয়তে নিষিদ্ধ ‘রিশওয়াত’ তথা উৎকোচের শামিল।
অবশ্য কোনো চিকিৎসক যদি তাদেরকে স্পষ্ট বলে নেন যে, আমি তোমাদের ওষুধ গ্রহণ করব না। তবে তোমরা চাইলে গরীব রোগীদেরকে দেওয়ার জন্য আমার নিকট দিতে পার, আর কোম্পানির প্রতিনিধি কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করে বিলি করার জন্য তাকে ওষুধ প্রদান করে এবং প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে চিকিৎসককে তাদের ওষুধ লেখার জন্য চাপ না দেওয়া হয় তাহলে সেক্ষেত্রে তিনি ওষুধগুলো গ্রহণ করে মানুষের মাঝে বিতরণ করতে পারবেন।
-আলমাবসূত, সারাখসী ১৬/৮২; মাআলিমুস সুনান ৪/১৬১; রদ্দুল মুহতার ৫/৩২৬
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم