প্রশ্ন
আমার চাচা এক মাস আগে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুর পূর্বে সুস্থ অবস্থায় তিনি আমাদের গ্রামের মাদরাসার জন্য আট শতাংশের একটি জমি ওয়াকফ করেন। তিনি মৌখিকভাবে বলেছিলেন, ‘আমি আমার এই আট শতাংশ জমি আমাদের গ্রামের মাদরাসার জন্য ওয়াকফ করলাম। তবে যতদিন আমি বেঁচে আছি ততদিন আমি এই জমির ফল-ফসল ভোগ করব। আমার মৃত্যুর পরে মাদরাসা এটি নিয়ে নিবে।’ চাচার ইন্তেকালের পর চাচাত ভাইয়েরা এক হুযুরকে মাসআলা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন যে, আট শতাংশ জমি যদি মৃতের রেখে যাওয়া সম্পত্তির এক তৃতীয়াংশ বা তার চেয়ে কম হয় তাহলে সেটা পুরোটাই মাদরাসার হবে। আর যদি এক তৃতীয়াংশের চেয়ে বেশি হয় তাহলে এক তৃতীয়াংশ পরিমাণ মাদরাসার জন্য ওয়াকফ হবে। বকিটা ওয়ারিশদের সম্পত্তি বলে বিবেচিত হবে। এখন চাচাত ভাইয়েরা জানতে চায় যে, ঐ কথা কি ঠিক? অনুগ্রহপূর্বক সঠিক মাসআলা জানানোর অনুরোধ রইল।
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا و مصليا و مسلما
প্রশ্নোক্ত অবস্থায় আপনার চাচা যেহেতু সুস্থ অবস্থায় আট শতাংশ জমি মাদরাসার জন্য ওয়াকফ করেছেন (ওয়াকফের অসিয়ত করেননি) তাই আট শতাংশ জমি পুরোটাই মাদরাসার জন্য ওয়াকফ হয়ে গিয়েছে। এক্ষেত্রে তিনি যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন তিনি এ জমির ফল-ফসল ভোগ করবেন- এই শর্ত করার কারণে ওয়াকফ কার্যকর হতে কোনো সমস্যা হয়নি। এই জাতীয় শর্ত করা হলেও ওয়াকফ সহিহ হয়ে যায়। সুতরাং তার মৃত্যুর পর ঐ জমি পুরোটাই (আট শতাংশ) মাদরাসার ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে বিবেচিত হবে।
এক্ষেত্রে ‘এক তৃতীয়াংশ পরিমাণ’ সম্পত্তিতে ওয়াকফ কার্যকর হওয়ার কথা সহিহ নয়। কারণ মৃতব্যক্তির রেখে যাওয়া সম্পত্তির এক তৃতীয়াংশের মধ্যে কার্যকর হওয়ার বিষয়টি অসিয়তের সাথে সম্পৃক্ত, ওয়াকফের সাথে নয়। কেউ যদি সরাসরি ওয়াকফ না করে ওয়াকফের অসিয়ত করে তখন সেটি অসিয়ত হিসাবে গণ্য হয়। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার চাচা সরাসরি ওয়াকফ করেছেন, অসিয়ত করেননি। তাই এ নিয়ে বিভ্রান্তির অবকাশ নেই।
-ফাতহুল কাদীর ৬/২২৭; মুখতাসারুত তহাবী পৃ. ১৩৭; আদ্দুররুল মুখতার ৪/৪১১; আলইখতিয়ার ৩/৫০
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم