প্রশ্ন
আমি সাধারণ চাকরিজীবী। সাংসারিক ব্যয়ের পর যে অতিরিক্ত টাকা হাতে থাকে তা আমি হজ্বের উদ্দেশ্যে একটু একটু করে জমাতে থাকি। এভাবে হজ্ব কাফেলায় জমা দেওয়ার মতো অর্থ জোগাড় হয়ে যায়। এদিকে আমার একটি লটারি ড্র হওয়ায় আরো কিছু টাকা হাতে আসে। আগের জমানো অর্থগুলো হজ্ব কাফেলায় দিয়ে লটারি থেকে পাওয়া অর্থ নিজের সঙ্গে রাখি এবং গোটা সফরে ব্যক্তিগত বেশ কিছু খরচ তা দিয়ে নির্বাহ করি। হজ্ব শেষে মক্কায় আমার এক প্রবাসী বন্ধুর সঙ্গে এ বিষয়ে আলাপকালে তিনি আমাকে জানালেন, লটারির টাকা হারাম! আর হারাম টাকা দিয়ে হজ্ব করলে হজ্ব হয় না। এতে আমি ভীষণ চিন্তিত হলাম। লটারির ঐ টাকা যে কেন সঙ্গে নিয়েছিলাম সেজন্য অনুতপ্ত হলাম। এখন আমার জানার বিষয় হল, আমার হজ্ব কি একেবারেই হয়নি? নাকি হলেও অসম্পূর্ণ হয়েছে? সেক্ষেত্রে আমার করণীয় কী? আমার খটকার মূল কারণ, আমার হজ্ব সফরের মৌলিক খরচ, যা কিনা আমি হজ্ব কাফেলায় জমা দিয়েছি তা তো নিঃসন্দেহে হালাল। প্রাসঙ্গিক খরচ সন্দেহযুক্ত হওয়াতে কি হজ্বের উপরে তার প্রভাব পড়বে? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا و مصليا و مسلما
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার হজ্বের টিকিট, মুআল্লিম ফি ও বাড়ীভাড়ার টাকা, যেগুলো মৌলিক খরচ হিসেবে ধর্তব্য, সে খরচ যেহেতু আপনার হালাল সম্পদ দ্বারাই প্রদান করেছেন তাই আপনার হজ্ব আদায় হয়ে গেছে। আর আপনি যে লটারির টাকা পেয়েছেন তা যদি হারাম হয়ে থাকে (যেমন ১০ টাকার লটারি টিকিটে হাজার হাজার/লক্ষ লক্ষ টাকা পাওয়া, প্রাইজ বন্ডের ড্র থেকে পুরস্কার পাওয়া, অথবা এজাতীয় অন্য কোনো হারাম লটারি) তাহলে সে টাকা খরচ করা জায়েয হয়নি। এ ধরনের টাকা গ্রহণ করা এমনিতেই হারাম। আর হজ্বের সফরে ব্যবহার করা আরো মারাত্মক গুনাহ। অতএব এখন আপনার কর্তব্য হল, লটারি থেকে পাওয়া সকল টাকা সদকা করে দেয়া এবং আল্লাহর কাছে তাওবা-ইস্তেগফার করা।
-আলমাজমু শারহুল মুহাযযাব ৭/৫১; আলবাহরুর রায়েক ২/৩০৯, রদ্দুল মুহতার ২/৪৫৬; গুনয়াতুন নাসিক পৃ. ১৯৫, ১৯৬
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم