প্রশ্ন
আমাদের কলেজে বন্ধুদের মধ্যে মজার ছলে একটি ঘটনা ঘটে যায়। ঘটনাটি হচ্ছে, আমার এক বন্ধু আমাদের কয়েকজন বন্ধুদের সামনে তার এক বান্ধবীকে মজা করে বলল, আমি তোকে বিবাহ করলাম। তার বান্ধবীও বলল, আমি কবুল করলাম। এরপর আর তাদের মধ্যে কোনোকিছু হয়নি; বরং দু’জনই স্বাভাবিকভাবে আলাদা আলাদা থাকে। পড়াশোনা শেষ করে আমার বন্ধু অন্য জায়গায় বিয়ে করে। এখন ঐ মেয়েটির বিবাহ ঠিক হয়েছে। মেয়ের বাবা উক্ত ঘটনা জানতে পেরে আমার বন্ধুকে তালাক দিতে বলছে। আর আমার বন্ধু বলছে আমি তো ঠাট্টা করে বলেছিলাম। তালাক দেয়ার কী প্রয়োজন? এখন মুফতী সাহেবের নিকট জানার বিষয় হচ্ছে, ঠাট্টাচ্ছলে ইজাব কবুলের দ্বারা তাদের ঐ বিবাহ কী হয়েছিল? এই মেয়েকে বিবাহ দেয়ার জন্য কী তালাক নেয়া জরুরি?
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا و مصليا و مسلما
হাসি-ঠাট্টা করে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে বিবাহের প্রস্তাব করা এবং কবুল বলার দ্বারাও বিবাহ হয়ে যায়। তিরমিযী শরিফের এক বর্ণনায় এসেছে হযরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন-
ثَلَاثٌ جِدّهُنّ جِدّ وَهَزْلُهُنّ جِدّ: النِّكَاحُ وَالطّلَاقُ وَالرّجْعَةُ.
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তিনটি বিষয় এমন, যা স্বাভাবিকভাবে করলেও কার্যকর হয় এবং ঠাট্টাচ্ছলে করলেও কার্যকর হয়। ১. বিয়ে। ২. তালাক এবং ৩. তালাক (রাজয়ী) দেওয়ার পর স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়া। (জামে তিরমিযী, হাদিস: ১১৮৪)
তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে স্বাক্ষীদের সামনে ঐভাবে ইজাব কবুলের কথা বলার দ্বারা তাদের বিবাহ হয়ে গেছে। অতএব ঐ মেয়েকে অন্যত্র বিবাহ দিতে হলে প্রথমে আপনার বন্ধুর থেকে তালাক নিতে হবে। অন্যথায় অন্যত্র বিবাহ দেওয়া জায়েয হবে না। আর বিবাহের পর তাদের যেহেতু নির্জনবাস হয়নি তাই ইদ্দতের প্রয়োজন হবে না। তালাকের পরপরই মেয়েটি অন্যত্র বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে।
উল্লেখ্য, বিবাহ ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিধান। এ নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করা বা এটাকে রসিকতার মাধ্যম বানানো অন্যায়। এ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। এছাড়া বেগানা ছেলেমেয়েদের দেখা-সাক্ষাৎ আড্ডা ইত্যাদি মারাত্মক গুনাহ। এ থেকে বিরত থাকা কর্তব্য।
-ফাতহুল কাদীর ৩/১১০; রদ্দুল মুহতার ৩/১১; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩২৭; মাজমাউল আনহুর ১/৪৬৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৪/১৩
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم