প্রশ্ন
আজকে আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেব বললেন, যে সকল বাচ্চাদের বয়স ছয় বছরের নিচে তাদেরকে মসজিদে আনা হারাম। জানতে চাচ্ছি, শরিয়তে এমন কোনো নিষেধাজ্ঞা আছে কি?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
না, এ জাতীয় কোনো নিষেধাজ্ঞার কথা শরিয়তে বর্ণিত নেই। উক্ত ইমাম সাহেব ভুল বলেছেন। বরং এর বিপরীত বিষয় হাদিসে বর্ণিত আছে। হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন,
إِنِّي لَأَقُومُ فِي الصَّلَاةِ، أُرِيدُ أَنْ أُطَوِّلَ فِيهَا، فَأَسْمَعُ بُكَاءَ الصَّبِيِّ فَأَتَجَوَّزُ فِي صَلَاتِي؛ كَرَاهِيَةَ أَنْ أَشُقَّ عَلَى أُمِّهِ
‘আমি অনেক সময় দীর্ঘ করে সালাত আদায়ের ইচ্ছা নিয়ে দাঁড়াই। পরে শিশুর কান্নাকাটি শুনে সালাত সংক্ষেপ করি। কারণ শিশুর মাকে কষ্টে ফেলা আমি পছন্দ করি না।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ৭০৭]
উক্ত হাদিস থেকেই বুঝা যাচ্ছে, বাচ্চাদেরকে মসজিদে নিয়ে আসা যাবে। তাছাড়া বাচ্চাদেরকে মসজিদে নিয়ে আসলে তারা নামাজের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠবে। হাদিস শরিফে এসেছে,
عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، صَاحِبِ رَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم قَالَ بَيْنَمَا نَحْنُ نَنْتَظِرُ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لِلصَّلَاةِ فِي الظُّهْرِ أَوِ الْعَصْرِ وَقَدْ دَعَاهُ بِلَالٌ لِلصَّلَاةِ إِذْ خَرَجَ إِلَيْنَا وَأُمَامَةُ بِنْتُ أَبِي الْعَاصِ بِنْتُ ابْنَتِهِ عَلَى عُنُقِهِ فَقَامَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِي مُصَلَاهُ وَقُمْنَا خَلْفَهُ وَهِيَ فِي مَكَانِهَا الَّذِي هِيَ فِيهِ قَالَ فَكَبَّرَ فَكَبَّرْنَا قَالَ حَتَّى إِذَا أَرَادَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ يَرْكَعَ أَخَذَهَا فَوَضَعَهَا ثُمَّ رَكَعَ وَسَجَدَ حَتَّى إِذَا فَرَغَ مِنْ سُجُودِهِ ثُمَّ قَامَ أَخَذَهَا فَرَدَّهَا فِي مَكَانِهَا فَمَا زَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَصْنَعُ بِهَا ذَلِكَ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ حَتَّى فَرَغَ مِنْ صَلَاتِهِ
‘রাসূল (সা.)-এর সাহাবী আবু ক্বাতাদা (রা.) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমরা যোহর কিংবা আসরের নামাজ আদায়ের জন্য রাসূল (সা.)-এর অপেক্ষায় ছিলাম। বিলাল (রা.) তাঁকে নামাজের জন্য আহবান করলে তিনি উমামা বিনতে আবুল আসকে কাঁধে নিয়ে আমাদের নিকট আসেন। অতঃপর তিনি ইমামতির জন্য তাঁর জায়গায় দাঁড়ালেন এবং আমরা তাঁর পিছনে দাঁড়ালাম। উমামা তখনও তাঁর কাঁধেই ছিলো। অতঃপর তিনি তাকবীর বললে আমরাও তাকবীর বললাম। বর্ণনাকারী বলেন, রাসূল (সা.) রুকূর ইচ্ছা করলে তাকে নিচে নামিয়ে রুকূ ও সিজদা করতেন। অতঃপর সিজদা থেকে উঠার সময় তাকে পুনরায় কাঁধে উঠিয়ে নিতেন। রাসূল (সা.) প্রতি রাকাতেই এরূপ করেন এবং এভাবেই তিনি নামাজ শেষ করেন।’ [সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৯২০]
তবে লক্ষ্য রাখতে হবে, বাচ্চা যেন দুষ্টামি করে কারো নামাজে ব্যাঘাত না ঘটায়। আর একেবারে অবুঝ বাচ্চাকে না আনাই ভাল।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم