প্রশ্ন
আয়াতুল কুরসীর ফযিলত সম্পর্কে জানতে চাচ্ছি।
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلم
আয়াতুল কুরসীর ফযিলত নিম্নোক্ত হাদিস শরিফ থেকেই বুঝে আসে-
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ وَكَّلَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِحِفْظِ زَكَاةِ رَمَضَانَ فَأَتَانِي آتٍ فَجَعَلَ يَحْثُو مِنْ الطَّعَامِ فَأَخَذْتُهُ وَقُلْتُ وَاللَّهِ لَأَرْفَعَنَّكَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِنِّي مُحْتَاجٌ وَعَلَيَّ عِيَالٌ وَلِي حَاجَةٌ شَدِيدَةٌ قَالَ فَخَلَّيْتُ عَنْهُ فَأَصْبَحْتُ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ مَا فَعَلَ أَسِيرُكَ الْبَارِحَةَ قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ شَكَا حَاجَةً شَدِيدَةً وَعِيَالًا فَرَحِمْتُهُ فَخَلَّيْتُ سَبِيلَهُ قَالَ أَمَا إِنَّهُ قَدْ كَذَبَكَ وَسَيَعُودُ فَعَرَفْتُ أَنَّهُ سَيَعُودُ لِقَوْلِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّهُ سَيَعُودُ فَرَصَدْتُهُ فَجَاءَ يَحْثُو مِنْ الطَّعَامِ فَأَخَذْتُهُ فَقُلْتُ لَأَرْفَعَنَّكَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ دَعْنِي فَإِنِّي مُحْتَاجٌ وَعَلَيَّ عِيَالٌ لَا أَعُودُ فَرَحِمْتُهُ فَخَلَّيْتُ سَبِيلَهُ فَأَصْبَحْتُ فَقَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ مَا فَعَلَ أَسِيرُكَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ شَكَا حَاجَةً شَدِيدَةً وَعِيَالًا فَرَحِمْتُهُ فَخَلَّيْتُ سَبِيلَهُ قَالَ أَمَا إِنَّهُ قَدْ كَذَبَكَ وَسَيَعُودُ فَرَصَدْتُهُ الثَّالِثَةَ فَجَاءَ يَحْثُو مِنْ الطَّعَامِ فَأَخَذْتُهُ فَقُلْتُ لَأَرْفَعَنَّكَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ وَهَذَا آخِرُ ثَلَاثِ مَرَّاتٍ أَنَّكَ تَزْعُمُ لَا تَعُودُ ثُمَّ تَعُودُ قَالَ دَعْنِي أُعَلِّمْكَ كَلِمَاتٍ يَنْفَعُكَ اللَّهُ بِهَا قُلْتُ مَا هُوَ قَالَ إِذَا أَوَيْتَ إِلَى فِرَاشِكَ فَاقْرَأْ آيَةَ الْكُرْسِيِّ {اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ} حَتَّى تَخْتِمَ الْآيَةَ فَإِنَّكَ لَنْ يَزَالَ عَلَيْكَ مِنْ اللَّهِ حَافِظٌ وَلَا يَقْرَبَنَّكَ شَيْطَانٌ حَتَّى تُصْبِحَ فَخَلَّيْتُ سَبِيلَهُ فَأَصْبَحْتُ فَقَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا فَعَلَ أَسِيرُكَ الْبَارِحَةَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ زَعَمَ أَنَّهُ يُعَلِّمُنِي كَلِمَاتٍ يَنْفَعُنِي اللَّهُ بِهَا فَخَلَّيْتُ سَبِيلَهُ قَالَ مَا هِيَ قُلْتُ قَالَ لِي إِذَا أَوَيْتَ إِلَى فِرَاشِكَ فَاقْرَأْ آيَةَ الْكُرْسِيِّ مِنْ أَوَّلِهَا حَتَّى تَخْتِمَ الْآيَةَ {اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ} وَقَالَ لِي لَنْ يَزَالَ عَلَيْكَ مِنْ اللَّهِ حَافِظٌ وَلَا يَقْرَبَكَ شَيْطَانٌ حَتَّى تُصْبِحَ وَكَانُوا أَحْرَصَ شَيْءٍ عَلَى الْخَيْرِ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَمَا إِنَّهُ قَدْ صَدَقَكَ وَهُوَ كَذُوبٌ تَعْلَمُ مَنْ تُخَاطِبُ مُنْذُ ثَلَاثِ لَيَالٍ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ لَا قَالَ ذَاكَ شَيْطَانٌ
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাকে সদকাতুল ফিতরের মাল পাহারা দেওয়ার জন্য নিযুক্ত করলেন। হঠাৎ এক রাতে দেখলাম, অপরিচিত এক লোক সদকাতুল ফিতরের মাল (খাদ্যশস্য) থেকে অঞ্জলিভরে নিয়ে যাচ্ছে। আমি তাকে ধরে ফেললাম। আর বললাম, তোমাকে অবশ্যই রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর হাতে তুলে দিব। লোকটি বলল, দেখুন, আমি অভাবগ্রস্ত। একটি পরিবারের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব আমার উপর। আমাকে ছেড়ে দিন। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, এ কথা শুনে আমি তাকে ছেড়ে দিলাম। সকালে রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, হে আবু হুরায়রা! গতকাল রাতে তোমার বন্দীর কী হল? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! সে বলল, প্রচন্ডভাবে সে অভাবগ্রস্ত। তার পরিবারও রয়েছে। তখন তার প্রতি আমার দয়া হল তাই তাকে ছেড়ে দিয়েছি। রাসূল (সা.) বললেন, সে মিথ্যা বলেছে। আবারো সে আসবে। আমি তখন নিশ্চিত হলাম, রাসূলুল্লাহ (সা.) যেহেতু বলেছেন সে আসবে তাহলে সে অবশ্যই আসবে। তাই আমি দ্বিতীয় রাতে ওঁৎপেতে থাকলাম। ঠিকই সে দ্বিতীয় রাতে এসে অঞ্জলিভরে খাবার নিতে লাগল। আমি তাকে আবারো ধরলাম। এবং বললাম, তোমাকে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর হাতে তুলে দিব। সে আবারো একই কথা বলল। আমিও তাকে পূর্বের ন্যায় ছেড়ে দিলাম। সকালে রাসূলুল্লাহ (সা.) সব শুনে পূর্বের ন্যায় বললেন, সে তোমাকে মিথ্যা বলেছে। আবারো সে আসবে। এভাবে তৃতীয়বার যখন ধরা পড়ল তখন আমি বললাম, এ নিয়ে তিনবার হল। প্রতিবারই তুমি বলেছ আর আসবে না, কিন্তু তুমি আবারো এসেছ। আজ আর তোমাকে ছাড়ব না। তখন সে বলল, আমাকে ছেড়ে দিন। আপনাকে আমি কিছু কালিমা শিখিয়ে দিব, যা পাঠ করলে আল্লাহ তাআলা আপনাকে উপকৃত করবেন। আমি তার কথায় রাজি হয়ে বললাম, সেই কালিমাগুলো কী? সে বলল, আপনি রাতে যখন ঘুমাতে যাবেন তখন শোয়ার আগে আয়াতুল কুরসী পড়বেন। তাহলে সকাল পর্যন্ত আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন হেফাযতকারী আপনার জন্য নিযুক্ত থাকবে এবং শয়তান সকাল পর্যন্ত আপনার নিকট আসতে পারবে না। এরপর আমি তাকে ছেড়ে দিলাম। সকালে রাসূলুল্লাহ (সা.) সব শুনে বললেন, সে চরম মিথ্যাবাদী। তবে এই কথাটা সত্য বলেছে। তুমি কি জান, গত তিন রাতে কার সাথে কথা বলেছ? আবু হুরায়রা (রা.) বললেন, না। আমি জানি না। রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, সে ছিল শয়তান। [সহিহ বুখারি, হাদিস: ২৩১১
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم