প্রশ্ন
আপনাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জানতে পেরেছি যে, নবিগণের কবরে সওয়াল জবাব হবে না। জানতে চাচ্ছি নবিগণ বাদে আর কয় শ্রেণির ব্যক্তির কবরে সওয়াল জবাব হবে না?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
হাদিসের আলোকে বুঝা যায়, নবিগণ বাদে আরো পাঁচ শ্রেণির ব্যক্তিদের কবরে সওয়াল জবাব হবে না। নিম্নে তাদের তালিকা দেওয়া হল। যথা,
১. আল্লাহর পথের পাহারাদার। হাদিস শরিফে এসেছে রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন,
‘একটি দিবস ও একটি রাতের সীমান্ত প্রহরা একমাস সিয়াম পালন এবং ইবাদাতে রাত জাগার চেয়েও শ্রেষ্ঠ। আর যদি এ অবস্থায় তার মৃত্যু ঘটে, তাতে তার এ আমলের সওয়াব জারী থাকবে যে আমল সে করত এবং তার (শহিদসুলভ) রিযক অব্যাহত রাখা হবে এবং সে ব্যক্তি ফিৎনাসমূহ থেকে নিরাপদে থাকবে।’ [সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৯১৩]
২. আল্লাহর পথে শহিদ। হাদিস শরিফে এসেছে,
‘রাসূল (সা.)-এর এক সাহাবী থেকে বর্ণিত যে, এক সাহাবী জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! শহিদ ব্যতীত অন্যান্য মুমিনগণ কবরের ফিৎনার সমুখীন হবে এর কারণ কি? তিনি বললেন, তার মাথার উপর উজ্বল তরবারি তাকে কবরের ফিৎনা থেকে নিরাপদ রাখবে।’ [সুনানে নাসাঈ, হাদিস: ২০৫৩]
৩. যে ব্যক্তি প্রতিরাতে নিয়মিত সূরা মুলক পাঠ করে। হাদিস শরিফে এসেছে,
‘ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, কোনো এক সময় রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর এক সাহাবী একটি কবরের উপর তার তাঁবু খাটান। তিনি জানতেন না যে, তা একটি কবর। তিনি হঠাৎ বুঝতে পারেন যে, কবরে একটি লোক সূরা মুলক পাঠ করছে। সে তা পাঠ করে সমাপ্ত করলো। তারপর তিনি রাসূল (সা.)-এর নিকটে এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি একটি কবরের উপর তাঁবু খাটাই। আমি জানতাম না যে, তা কবর। হঠাৎ বুঝতে পারি যে, একটি লোক সূরা মুলক পাঠ করছে এবং তা সমাপ্ত করেছে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, এ সূরাটি প্রতিরোধকারী নাজাত দানকারী। এটা কবরের আযাব হতে তিলাওয়াতকারীকে নাজাত দান করে।’ [সুনানে তিরমিযী, হাদিস: ২৮৯০]
৪. যে ব্যক্তি পেটের পীড়ায় আক্রান্ত মারা যায়। হাদিস শরিফে এসেছে,
‘আব্দুল্লাহ ইবনে ইয়াসার (রহ.) বলেন যে, আমি এবং সুলায়মান ইবনে সুবাদ ও খালিদ ইবনে উরফাতা (রহ.) একস্থানে বসা ছিলাম। এমন সময় লোকজন উল্লেখ করল যে, এক ব্যক্তি পেটের পীড়ায় মৃত্যুবরণ করেছে। তখন তারা উভয়ে তার জানাযায় নামাজে উপস্থিত হতে ইচ্ছা করল। একজন অন্যজনকে বলল যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) কি বলেননি যে, যে ব্যক্তি পেটের পীড়ায় মারা যায় কবরে তাকে অবশ্যই শাস্তি দেওয়া হবে না? তখন অন্য ব্যক্তি বলল, হ্যাঁ (বলেছেন)।’ [সুনানে নাসাঈ, হাদিস: ২০৫২]
৫. যে ব্যক্তি জুমআর দিনে বা রাতে মৃত্যুবরণ করবে। হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) বলেছেন,
‘জুমুআর দিনে অথবা জুমুআর রাতে কোন মুসলিম ব্যক্তি যদি মৃত্যুবরণ করে তাহলে কবরের ফিতনা হতে আল্লাহ তাকে রক্ষা করেন।’ [সুনানে তিরমিযী, হাদিস: ১০৭৪]
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم