প্রশ্ন
উটের মাংস খেলে কি অজু ভেঙ্গে যায়?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
বিষয়টি মতভেদপূর্ণ। সাহাবায়ে কেরামের মাঝে বিষয়টি নিয়ে মতভেদ ছিল। যার ফলে ফুকাহায়ে কেরামের মাঝেও মতভেদ হয়ে গিয়েছে। তবে অধিকাংশ সাহাবায়ে কেরাম ও ফুকাহায়ে কেরামের মতে উটের মাংস খেলে অজু ভাঙ্গে না। হাদিস শরিফে এসেছে,
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَكَلَ عَرْقًا، أَوْ لَحْمًا، ثُمَّ صَلَّى وَلَمْ يَتَوَضَّأْ، وَلَمْ يَمَسَّ مَاءً
‘ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার রাসূল (সা.) হাড়ের মাংস খেলেন, বা মাংস খেলেন তারপর নামাজ পড়লেন। কিন্তু তিনি অজু করলেন না এবং পানিও স্পর্শ করলেন না।’ [সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৩৫৪]
আরেক দীর্ঘ হাদিসে এসেছে,
‘আমাদের সামনে একটি বড় পিয়ালা আনা হল। এর মধ্যে গোশতের টুকরা ও সারদ (ঝোলে ভিজানো রুটি) ভর্তি ছিল। আমরা তা থেকে খেতে লাগলাম। আমি পাত্রের এদিক-সেদিক থেকে নিয়ে খাচ্ছিলাম। রাসূল (সা.) তার সামনে থেকে নিয়ে খাচ্ছিলেন। তিনি তার বাঁ হাত দিয়ে আমার ডান হাত ধরে বললেন, হে ইকরাশ! এক জায়গা হতে খাও। কেননা সম্পূর্ণটাই একই খাদ্য।
তারপর আমাদের সামনে আরেকটি পিয়ালা আনা হল। এর মধ্যে বিভিন্ন রকমের কাঁচা-পাকা খেজুর ছিল। আমি আমার সামনে থেকেই খেতে থাকলাম। কিন্তু রাসূল (সা.) পাত্রের এদিক-সেদিক থেকে নিয়ে খাচ্ছিলেন। তিনি বললেন, হে ইকরাশ! তুমি পাত্রের যে কোন জায়গা হতে খেতে পার। কেননা সব খেজুর এক রকম নয়। তারপর আমাদের জন্য পানি দেয়া হল। রাসূল (সা.) তার উভয় হাত ধুলেন এবং ভিজা হাত দিয়ে নিজের মুখমণ্ডল, দুই হাত ও মাথা মুছলেন। তারপর তিনি বললেন, হে ইকরাশ! আগুন যে জিনিস পরিবর্তন করে দিয়েছে (তা খাওয়ার পর) এটাই হল অজু।’ [সুনানে তিরমিযী, হাদিস: ১৮৪৮]
আরেক হাদিসে এসেছে,
‘উমর (রা.) উটের মাংস খেয়ে নামাজ পড়েছেন, কিন্তু অজু করেননি।’ [মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদিস: ১৫৯৮]
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم