প্রশ্ন
বর্তমানে দেখা যায়, কোনো বন্দীর ফাঁসির আদেশ হলে সে ফাঁসির আগে দুই রাকাত নামাজ পড়ে থাকে। জানতে চাচ্ছি, এই নামাজের শরয়ি কোনো ভিত্তি আছে কি?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
ফাঁসির আসামী ফাঁসির আগে যে দুই রাকাত নামাজ পড়ে থাকে তা নফল নামাজ। আর নফল নামাজ যে কোনো সময় পড়া যায়। শরিয়তে এর জন্য কোনো সময় নির্দিষ্ট করে দেয়নি। তবে হাদিসে পাওয়া যায় যে, মক্কার কাফের মুশরিকরা যখন খুবাইব (রা.)-কে শহিদ করে দেওয়ার ইচ্ছা করে তখন তিনি দুই রাকাত নামাজ পড়েন। নামাজ শেষে মক্কার কাফেররা তাকে শহিদ করে দেয়। হাদিস শরিফে এসেছে,
‘অতঃপর তারা (কাফেররা) খুবাইবকে শহিদ করার উদ্দেশ্যে হারাম এর নিকট হতে হিল্লের দিকে নিয়ে বের হয়ে পড়ল, তখন খুবাইব (রা.) তাদের বললেন, আমাকে দু’রাকাত নামাজ আদায় করতে দাও। তারা তাঁকে সে অনুমতি দিল। তিনি দু’রাকাত নামাজ আদায় করে নিলেন। অতঃপর তিনি বললেন, তোমরা যদি ধারণা না করতে যে, আমি মৃত্যুর ভয়ে ভীত হয়ে পড়েছি তবে আমি নামাজকে দীর্ঘ করতাম। হে আল্লাহ! তাদেরকে এক এক করে ধ্বংস করুন। (অতঃপর তিনি এ কবিতা দু’টি আবৃত্তি করলেন),
যখন আমি মুসলিম হিসেবে শহীদ হচ্ছি তখন আমি কোন রূপ ভয় করি না।
আল্লাহর উদ্দেশ্যে আমাকে যেখানেই মাটিতে লুটিয়ে ফেলা হোক না কেন।
আমার এ মৃত্যু আল্লাহ তা‘আলার জন্যই হচ্ছে। তিনি যদি ইচ্ছা করেন,
তবে আমার দেহের প্রতিটি খন্ডিত জোড়াসমূহে বরকত সৃষ্টি করে দিবেন।’’
অবশেষে হারিসের পুত্র তাঁকে শহিদ করে ফেলে। বস্তুত যে মুসলিম ব্যক্তিকে বন্দী অবস্থায় শহিদ করা হয় তার জন্য দু’রাকাত নামাজ আদায়ের এ রীতি খুবাইব (রা.)-ই প্রবর্তন করে গেছেন।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩০৪৫]
সুতরাং ফাঁসির আসামীর জন্য ফাঁসির আগে দুই রাকাত নামাজ পড়তে শরিয়তের দৃষ্টিতে কোনো অসুবিধা নেই।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم