প্রশ্ন
আমার ছেলে হিফয বিভাগে পড়ে। বাড়িতে আসলে সে অনেক সময় কুরআন তিলাওয়াত করে। তখন তার পাশে বসে আমি তার তিলাওয়াত শুনি। একদিন সে তিলাওয়াত করছিল। আর আমি পাশে বসে শুনছিলাম। তিলাওয়াতের মাঝে সে একবার বলে উঠল, আম্মু! সিজদার আয়াত পড়েছি। আপনাকেও সিজদা করতে হবে। হুজুরের কাছে আমার জানার বিষয় হল, আমি ঐ সময় হায়েয অবস্থায় ছিলাম। এ অবস্থায় সিজদার আয়াত শোনার কারণে কি আমার উপর সিজদা ওয়াজিব হয়েছে? পবিত্র হওয়ার পর তা আদায় করতে হবে? এ ব্যাপারে শরীয়তের বিধান কী? জানিয়ে বাধিত করবেন।
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا و مصليا و مسلما
হায়েয অবস্থায় সিজদার আয়াত শুনলে সিজদা ওয়াজিব হয় না। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার উপর সিজদা ওয়াজিব হয়নি। অতএব পবিত্র হওয়ার পর তা আদায় করতে হবে না। প্রসিদ্ধ তাবেয়ী ইবরাহীম নাখায়ী (রাহ.) থেকে বর্ণিত আছে-
عَنْ إبْرَاهِيمَ أَنّهُ كَانَ يَقُولُ فِي الْحَائِضِ تَسْمَعُ السّجْدَةَ، قَالَ: لاَ تَسْجُدُ، هِيَ تَدَعُ مَا هُوَ أَعْظَمُ مِنَ السّجْدَةِ، الصّلاَة الْمَكْتُوبَةَ.
অর্থাৎ তিনি বলতেন, হায়েয অবস্থায় সিজদার আয়াত শুনলে সিজদা করবে না। তার তো এর চেয়ে বড় বিধান ফরয নামাযই পড়তে হয় না। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদিস: ৪৩৪৭)
হাম্মাদ (রাহ.) বলেন-
سَأَلْتُ سَعِيدَ بْنَ جُبَيْرٍ وَإِبْرَاهِيمَ عَنِ الْحَائِضِ تَسْمَعُ السّجْدَةَ. فَقَالاَ: لَيْسَ عَلَيْهَا سُجُودٌ، الصّلاَة أَكْبَرُ مِنْ ذلِكَ.
অর্থাৎ আমি সাঈদ বিন জুবায়ের ও ইবরাহীম (রাহ.)-কে ঋতুমতী নারীর ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলাম, যে সিজদার আয়াত শোনে (তাকে কি সিজদা করতে হবে?) তাঁরা বললেন, ঋতুমতী নারীর উপর সিজদা অপরিহার্য নয়। নামায তো এর চেয়েও বড় বিধান (তা সত্ত্বেও নামায তার উপর ফরয নয়)। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদিস: ৪৩৪৮)
-কিতাবুল আছল ১/২৭২; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৬৫; আলমাবসূত, সারাখসী ২/৫; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৫৮১; আলবাহরুর রায়েক ২/১১৯
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم