প্রশ্ন
লোকমুখে প্রচলিত যে, জান্নাতের সুসংবাদ শুধুমাত্র ১০ জন সাহাবী পেয়েছিলেন। যাদেরকে আশারায়ে মুবাশশারা বলা হয়। আমার প্রশ্ন হলো, বিষয়টি কি আসলে এমনই? অন্য কোনো সাহাবী কি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জান্নাতের সুসংবাদ পাননি?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
লোকমুখে যদিও বিষয়টি প্রচলিত যে, জান্নাতের সুসংবাদ ১০ সাহাবী পেয়েছিলেন। কিন্তু তারা ছাড়াও আরো অনেক সাহাবী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সুসংবাদ পেয়েছিলেন। বিভিন্ন সহিহ হাদিস থেকে প্রায় ২৮ জন সাহাবীর কথা পাওয়া যায়। নিম্নে কিছু উল্লেখ করা হলো,
এক হাদিসে এসেছে,
فَاطِمَة سَيِّدَةُ نِسَاءِ أَهْلِ الجَنّةِ، وَأَنّ الحَسَنَ وَالحُسَيْنَ سَيِّدَا شَبَابِ أَهْلِ الجَنّةِ
‘ফাতেমা হবে জান্নাতী নারীদের সরদার আর হাসান-হুসাইন হবে, জান্নাতের যুবকদের সরদার।’[সুনানে তিরমিযী, হাদিস: ৩৭৮১]
আরেক হাদিসে এসেছে,
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, একদিন জিবরীল (আ.) রাসূল (সা.)-এর কাছে আসলেন এবং বললেন,
يَا رَسُولَ اللهِ! هَذِهِ خَدِيجَةُ قَدْ أَتَتْ، مَعَهَا إِنَاءٌ فِيهِ إِدَامٌ، أَوْ طَعَامٌ أَوْ شَرَابٌ، فَإِذَا هِيَ أَتَتْكَ فَاقْرَأْ عَلَيْهَا السَّلاَمَ مِنْ رَبِّهَا وَمِنِّي، وَبَشِّرْهَا بِبَيْتٍ فِي الجَنّةِ مِنْ قَصَبٍ، لاَ صَخَبَ فِيهِ، وَلاَ نَصَبَ
‘হে আল্লাহ রাসূল! ওই যে খাদিজা একটি পাত্রে তরকারি অথবা খাবার বা পানি নিয়ে আপনার কাছে আসছে। যখন সে আপনার কাছে আসবে আপনি তাঁকে তাঁর রবের পক্ষ থেকে এবং আমার পক্ষ থেকে সালাম বলবেন এবং তাঁকে জান্নাতে একটি মুক্তা-প্রাসাদের সুসংবাদ দেবেন; যেখানে না আছে কোনো শোরগোল,না আছে কষ্ট-ক্লান্তি।’[সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩৮২০]
এছাড়াও আরো অনেক হাদিসে আরো কিছু সাহাবীর নাম পাওয়া যায়। যাদের ব্যাপারে জান্নাতের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে। আর ঐ ১০ জন সাহাবীর বিষয়টি প্রসিদ্ধ হয়ে যাওয়ার কারণ হয়ত এটাই ছিল যে, তাদের জান্নাতী হওয়ার সুসংবাদ রাসূল (সা.) একই মজলিসে দিয়েছিলেন এবং তারা প্রত্যেকেই প্রথম সারির সাহাবী ছিলেন। একারণেই কিছু মানুষের এ ধারণা জন্মে গেছে যে, শুধু এ ১০ জন সাহাবীই জান্নাতের সুসংবাদ পেয়েছিলেন।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم