প্রশ্ন
আমাদের এলাকার এক ব্যক্তির পিতা মাতার সাথে কোনো এক কারণে ঝগড়া হয়। যার কারণে সে পিতা মাতার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে। পিতা মাতার সাথে কথা বন্ধ করে দেওয়া কেমন গুনাহ?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
পিতা মাতার সাথে উত্তম আচরণ করা প্রত্যেক সন্তানের জন্য অপরিহার্য। আল্লাহ তাআলা তাদের সাথে সদাচার করাকে ফরজ করে দিয়েছেন।
কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে,
وَقَضَى رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِنْدَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُلْ لَهُمَا أُفٍّ وَلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُلْ لَهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا وَاخْفِضْ لَهُمَا جَنَاحَ الذُّلِّ مِنَ الرَّحْمَةِ وَقُلْ رَبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا
‘তোমার রব আদেশ করেছেন যে, তিনি ছাড়া আর কারো ইবাদত তোমরা করবে না এবং পিতামাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবে। যদি তোমার বর্তমানে তাদের একজন বা উভয়ে বার্ধক্যে পৌঁছে যায় তবে তুমি তাদের ‘উফ’ বলবে না এবং তাদের ধমক দিবে না; বরং তাদের সঙ্গে নম্রভাবে কথা বলবে। আর করুণাভরে তাদের সামনে বিনয়ের ডানা বিছিয়ে দাও এবং বল, হে আমার রব! তাদের প্রতি দয়া করুন, যেমন তারা শৈশবে আমাকে লালন-পালন করেছেন।’[সূরা বনী ইসরাইল, আয়াত ২৩-২৪]
হাদিস শরিফে এসেছে,
‘আবু বাকরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন,আমি কি তোমাদেরকে জঘন্যতম কবীরা গুনাহ কী তা বলব? এভাবে তিনি এ কথাটি তিনবার বললেন। তখন আমরা বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ অবশ্যই বলুন। রাসূল (সা.) বললেন, (জঘন্যতম কবীরা গুনাহ হলো) আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করা এবং মা-বাবার অবাধ্য হওয়া।’[সহিহ বুখারি, হাদিস ৫৯৭৬; সহিহ মুসলিম, হাদিস ৮৭]
পাশাপাশি কারো সাথে কথা বন্ধ করাও কবীরা গুনাহ। আর পিতা মাতার সাথে কথা বন্ধ করলে তো আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করারও গুনাহ হবে।
হাদিস শরিফে এসেছে,
‘রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন, কোনো মুসলমানের জন্য অপর ভাইয়ের সাথে তিনদিনের বেশি সম্পর্ক ছিন্ন রাখা বৈধ নয়। সুতরাং যে ব্যক্তি তিনদিনের বেশি সম্পর্ক ছিন্ন রাখবে এবং এ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।’[সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৪৮৭৮]
আরেক হাদিসে এসেছে,
রাসূল (সা.) বলেছেন, আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী বেহেশতে প্রবেশ করবে না।[সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৯৮৪; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৫৫৬]
এক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তির জন্য আবশ্যক হলো, অতিসত্বর পিতা মাতার কাছে মাফ চেয়ে তাদেরকে সন্তুষ্ট করা। আর ভবিষ্যতে এ জাতীয় কাজ থেকে বিরত থাকা।
ফাতাওয়া খানিয়া ৩/২৭৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/৩১৯
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم