প্রশ্ন
আমি ভবিষ্যতে একজন বিচারক হতে চাই। আমি জানতে চাই, বিচারকের দায়িত্ব গ্রহণের ব্যাপারে ইসলামে কতটুকু গুরত্বারোপ করেছে? দলিলসহ জানতে চাই।
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
ইসলাম বিচারিক পদের ব্যাপারে অত্যন্ত গুরুত্বারোপ করেছে। কারণ, একজন বিচারক যখন ন্যায় বিচার করবেন, তখন মানুষের পারস্পরিক মিলমিশ, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি বজায় থাকবে এবং সমাজের উন্নতি ও অগ্রগতি অব্যাহত থাকবে। তাই বিচারকের দায়িত্ব ও জবাবদিহিতার ব্যাপারে ইসলামে খুব কঠোরতা করা হয়েছে। পাশাপাশি এই ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে যে, যারা ন্যায় বিচার করবে তাদের জন্য পরকালে রয়েছে মহাপুরস্কার।
হাদিস শরিফে এসেছে,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: مَنْ وَلِيَ الْقَضَاءَ فَقَدْ ذُبِحَ بِغَيْرِ سِكِّينٍ
‘আবু হুরায়রাহ (রা.) সূত্রে বর্ণিত। রাসূল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তিকে বিচারকের পদে নিযুক্ত করা হলো, সে যেন বিনা ছুরিতে জবাই হলো।’ [সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৩৫৭১]
অপর হাদিসে এসেছে,
‘ইবনে বুরাইদাহ (রহ.) থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত। রাসূল(সা.) বলেছেন, বিচারক তিন প্রকার। এক প্রকার বিচারক জান্নাতী এবং অপর দু’ প্রকার বিচারক জাহান্নামী। জান্নাতী বিচারক হলো, যে সত্যকে বুঝে তদানুযায়ী ফায়সালা দেয়। আর যে বিচারক সত্যকে জানার পর স্বীয় বিচারে জুলুম করে সে জাহান্নামী এবং যে বিচারক অজ্ঞতাবশত ফায়সালা দেয় সেও জাহান্নামী।’ [সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৩৫৭৩]
আরেক হাদিসে এসেছে,
‘আমর ইবনুল আস (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি রাসূল (সা.)-কে এ কথা বলতে শুনেছেন, কোনো বিচারক ইজতিহাদে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছলে তার জন্য আছে দু’টি পুরস্কার। আর বিচারক ইজতিহাদে ভুল করলে তার জন্যও রয়েছে একটি পুরস্কার।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ৭৩৫২]
অন্য হাদিসে এসেছে,
‘আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, নিশ্চয় সত্যনিষ্ঠ বিচারক আল্লাহ তাআলার নিকট তাঁর ডানপাশে নূরের মিম্বারের উপর অবস্থান করবে। যদিও আল্লাহ তাআলার উভয় হাতই ডান (কল্যাণকর)। তারা হলো সে সমস্ত বিচারক- যারা তাদের বিচারালয়ে, নিজেদের পরিবার-পরিজনদের মাঝে এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় ন্যায় ও ইনসাফ কায়েম করে।’ [মিশকাত, হাদিস: ৩৬৯০]
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم