প্রশ্ন
রোগী দেখতে যাওয়ার আদবগুলো কী কী? হাদিসের আলোকে জানতে চাচ্ছি।
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
রোগী দেখতে যাওয়া, তার সেবা করা অপরিহার্য। কিন্তু এতে যেনরোগীর কোনো কষ্ট না হয়, সে বিষয়ের প্রতিও ইসলাম দৃষ্টি রেখেছে। বিভিন্ন হাদিসে রোগী দেখতে যাওয়ার কিছু আদবের কথা বলা হয়েছে। নিম্নে সেগুলো উল্লেখ করা হলো,
১. উপযুক্ত সময় নির্বাচন করা। যাতে রোগীর কোনো কষ্ট না হয়।
হাদিস শরিফে এসেছে,
‘আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সা.) তিন দিন পর রোগীকে দেখতে যেতেন।’ [সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১৪৩৭]
২. অজু সহকারে রোগী দেখতে যাওয়া।
হাদিস শরিফে এসেছে,
‘আনাস (রা.) সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে লোক ভালো করে অজু করে এবং একমাত্র সাওয়াবের উদ্দেশ্যে কোনো অসুস্থ মুসলমান ভাইকে দেখতে যায়, তাকে দোজখ থেকে ষাট বছরের রাস্তার সমপরিমাণ দূরে রাখা হবে।’ [সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৩০৯৭]
৩. রোগীর অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা।
হাদিস শরিফে এসেছে,
‘নাফে (রহ.) বলেন, ইবনে উমর (রা.) রুগ্ন ব্যক্তির নিকট উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞেস করতেন যে, সে কেমন আছে? আর তিনি তার নিকট থেকে বিদায়কালে বলতেন, আল্লাহ তোমার কল্যাণ করুন। তিনি এর অধিক কিছু বলতেন না।’ [আদাবুল মুফরাদ, হাদিস: ৫২৯]
৪. রোগীর সুস্থতার জন্য দোয়া করা।
হাদিস শরিফে এসেছে,
‘রাসূল (সা.) মক্কায় রোগাক্রান্ত সাদ (রা.)-কে দেখতে গেলেন। সাদ (রা.) কেঁদে দিলেন। তিনি বলেন, তোমাকে কিসে কাঁদাচ্ছে? তিনি বলেন, আমার আশংকা যে, আমি যে স্থান থেকে হিজরত করেছি, সাদ ইবনে খাওলার মত সেই স্থানেই বুঝি মারা যাব। রাসূল (সা.) বলেন: হে আল্লাহ! সাদকে আরোগ্য দান করুন। তিনি তিনবার দোয়া করলেন।’ [আল আদাবুল মুফরাদ, হাদিস: ৫২২]
৪. রোগীর কাছে বেশিক্ষণ অবস্থান না করা।
‘সাঈদ ইবনে মুসাইয়িব (রহ.)-এর একটি মুরসাল বর্ণনায় আছে- রোগী দেখার উত্তম পন্থা হলো রোগীর কাছ থেকে তাড়াতাড়ি ফিরে আসা।’ [বায়হাকি শুআবুল ইমান, হাদিস: ৯২২১, ৯২২২]
৫. ফিরে আসার সময় রোগীর কাছে দোয়া চাওয়া।
হাদিস শরিফে এসেছে,
‘উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) থেকে বর্ণিত। তিন বলেন, রাসূল (সা.) আমাকে বললেন: তুমি কোনো রোগীকে দেখতে গেলে তাকে তোমার জন্য দোয়া করতে বলো। কেননা তার দোয়া ফেরেশতাদের দোয়ার মত।’ [সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১৪৪১]
এছাড়াও অন্যান্য হাদিস থেকে আরো কিছু আদবের কথা জানা যায়। যেমন, রোগীর শরীরে হাত দিয়ে রোগ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা, রোগীর সামনে সান্ত্বনামূলক কথা বলা, রোগীর কাছে উচ্চস্বরে কথা না বলা ইত্যাদি।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم