প্রশ্ন
অনেক ভাইকে দেখা যায় যে, তারা দাওয়াত ও তাবলীগের গুরুত্ব বুঝানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের বানোয়াট ঘটনা বা হাদিস বলে থাকে। এটি কি বৈধ হবে?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
দাওয়াত ও তাবলীগের গুরুত্ব বুঝানোর জন্য অনেক সহিহ হাদিস ও ঘটনা রয়েছে। এই উদ্দেশ্যে মিথ্যা বা বানোয়াট হাদিস বা ঘটনা বলা হারাম। কোনো হাদিস বা ঘটনা কোনো বইয়ে পাওয়া গেলেই তা যাচাই বাছাই করা ছাড়া বর্ণনা করা যাবে না। বরং তা আগে যাচাই বাছাই করে তারপর বর্ণনা করতে হবে। হাদিসে এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা এসেছে।
হাদিস শরিফে এসেছে,
عَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” مَنْ حَدَّثَ عَنِّي حَدِيثًا وَهُوَ يَرَى أَنَّهُ كَذِبٌ فَهُوَ أَحَدُ الْكَاذِبِينَ
‘মুগীরাহ ইবনে শুবাহ (রা.) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূল (সা.) বলেছেন, আমার পক্ষ হতে যে লোক কোনো হাদিস বর্ণনা করে অথচ সে জানে যে, তা মিথ্যা, সে মিথ্যাবাদীদের একজন।’ [সুনানে তিরমিযি, হাদিস: ২৬৬২]
ইমাম তিরমিযি এই হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেছেন,
‘আমি আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুর রহমান (রহ.)-কে রাসূল (সা.)-এর হাদিস “যে ব্যক্তি আমার পক্ষ হতে কোন হাদিস বর্ণনা করে অথচ সে জানে যে, তা মিথ্যা, সে মিথ্যাবাদীদের একজন” সম্পর্কে প্রশ্ন করলাম। আমি বললাম, যদি কোনো ব্যক্তি হাদিস বর্ণনা করে এবং জানে যে, এর সনদ ক্রটিপূর্ণ তবে সে কি এ হাদিস মুতাবিক মিথ্যুক বলে পরিগণিত হবে? অথবা যদি কোনো ব্যক্তি মুরসাল হাদিসকে মুসনাদ হিসেবে বর্ণনা করে কিংবা সনদে উল্টাপাল্টা করে তাহলে সেও কি উক্ত হাদিসের আওতাভুক্ত বলে পরিগণিত হবে?
আবদুল্লাহ ইবনে আবদুর রাহমান বলেন, না, বরং এ হাদিসের তাৎপর্য হল: যে এমন হাদিস বর্ণনা করে, যে সম্পর্কে সে জানে না যে, এটা রাসূল (সা.)-এর হাদিস কিনা। আমি আশংকা করি যে, সে রাসূল (সা.) এর উক্ত হাদিসের আওতাভুক্ত হবে।’
অন্য হাদিসে এসেছে,
مَنْ كَذَبَ عَلَىَّ فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ
‘যে আমার উপর মিথ্যারোপ করবে সে যেন জাহান্নামে তার ঠিকানা বানিয়ে নিবে।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ১০৭]
তাই কোনো ভালো উদ্দেশ্যেও মিথ্যা ঘটনা বা বানোয়াট হাদিস বর্ণনা করা যাবে না।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم