প্রশ্ন
শুনেছি, কেয়ামতের পূর্বে ঈসা (আ.) অবতরণ করবেন। তিনি কি নবী হিসেবে অবতরণ করবেন না উম্মত হিসেবে?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
ঈসা (আ.) হলেন সেই মহান নবী যাকে আল্লাহ তাআলা আকাশে উঠিয়ে নিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা কুরআন মাজিদে ইরশাদ করেন:
وَمَا قَتَلُوهُ وَمَا صَلَبُوهُ وَلَكِنْ شُبِّهَ لَهُمْ وَإِنَّ الَّذِينَ اخْتَلَفُوا فِيهِ لَفِي شَكٍّ مِنْهُ مَا لَهُمْ بِهِ مِنْ عِلْمٍ إِلَّا اتِّبَاعَ الظَّنِّ وَمَا قَتَلُوهُ يَقِينًا بَلْ رَفَعَهُ اللَّهُ إِلَيْهِ وَكَانَ اللَّهُ عَزِيزًا حَكِيمًا
‘মূলত তারা তাঁকে হত্যা করতে পারেনি এবং ক্রুশবিদ্ধও করতে পারেনি; বরং তাদেরকে সন্দেহে ফেলা হয়েছে। নিশ্চয়ই যারা তাতে মতবিরোধ করেছিল তারাই সে বিষয়ে সন্দেহে রয়েছে। কল্পনার অনুসরণ ব্যতীত এ বিষয়ে তাদের কোনো জ্ঞান নেই। প্রকৃতপক্ষে তারা তাঁকে হত্যা করতে পারেনি। প্রকৃত কথা এই যে, আল্লাহ তাঁকে নিজের দিকে উঠিয়ে নিয়েছেন। আল্লাহ পরাক্রান্ত, মহাজ্ঞানী।’ [সূরা নিসা, আয়াত: ১৫৭-১৫৮]
আল্লাহ তাআলা ঈসা (আ.)কে আকাশে তুলে নিলেও কেয়ামতের পূর্বে আল্লাহ তাআলা তাকে পুনরায় পৃথিবীতে প্রেরণ করবেন।
হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) বলেন,
بَيْنَمَا هُوَ كَذَلِكَ إِذْ بَعَثَ اللَّهُ الْمَسِيحَ ابْنَ مَرْيَمَ فَيَنْزِلُ عِنْدَ الْمَنَارَةِ الْبَيْضَاءِ شَرْقِيَّ دِمَشْقَ بَيْنَ مَهْرُودَتَيْنِ وَاضِعًا كَفَّيْهِ عَلَى أَجْنِحَةِ مَلَكَيْنِ إِذَا طَأْطَأَ رَأْسَهُ قَطَرَ وَإِذَا رَفَعَهُ تَحَدَّرَ مِنْهُ جُمَانٌ كَاللُّؤْلُؤِ فَلَا يَحِلُّ لِكَافِرٍ يَجِدُ رِيحَ نَفَسِهِ إِلَّا مَاتَ وَنَفَسُهُ يَنْتَهِي حَيْثُ يَنْتَهِي طَرْفُهُ فَيَطْلُبُهُ حَتَّى يُدْرِكَهُ بِبَابِ لُدٍّ فَيَقْتُلُهُ ثُمَّ يَأْتِي عِيسَى ابْنَ مَرْيَمَ قَوْمٌ قَدْ عَصَمَهُمُ اللَّهُ مِنْهُ فَيَمْسَحُ عَنْ وُجُوهِهِمْ وَيُحَدِّثُهُمْ بِدَرَجَاتِهِمْ فِي الْجَنَّةِ
‘সে (দাজ্জাল) যখন মুসলমানদের ঈমান ধ্বংসের কাজে লিপ্ত থাকবে আল্লাহ তা’আলা তখন ঈসা ইবনে মারিয়াম (আ.) কে পাঠাবেন। জাফরানের রঙ্গে রঙ্গিত দুটি পোষক পরিহিত হয়ে এবং দুজন ফেরেশতার পাখার উপর হাত রেখে দামেস্ক শহরের পূর্বে অবস্থিত সাদা মিনারের উপরে তিনি অবতরণ করবেন। তিনি যখন মাথা নিচু করবেন তখন সদ্য গোসলখানা থেকে বেরিয়ে আসা ব্যক্তির মাথা থেকে যেভাবে পানি ঝরতে থাকে সেভাবে তাঁর মাথা থেকে পানির ফোটা ঝরতে থাকবে এবং যখন মাথা উঁচু করবেন তখন অনুরূপভাবে তাঁর মাথা হতে মণি-মুক্তার মত চকচকে পানির ফোঁটা ঝরতে থাকবে। কাফেরের শরীরে তাঁর নিঃশ্বাস পড়ার সাথে সাথেই কাফের মৃত্যু বরণ করবে। চোখের দৃষ্টিসীমা পর্যন্ত গিয়ে তাঁর নিঃশ্বাস শেষ হবে। তিনি দাজ্জালকে ফিলিস্তীনের লুদ্দ শহরের দরজায় পাকড়াও করে হত্যা করবেন। অতঃপর তাঁর নিকট এমন কিছু লোক আসবেন যাদেরকে আল্লাহ তাআলা দাজ্জালের ফিতনা হতে হেফাযত করেছেন। তিনি তাদের চেহারায় হাত বুলাবেন এবং বেহেশতের মধ্যে তাদের উচ্চ মর্যাদা সম্পর্কে সংবাদ দিবেন।’ [মুসলিম, অধ্যায়: কিতাবুল ঈমান।]
তবে তিনি নবী হিসেবে আসবেন না। বরং রাসূল (সা.) এর উম্মত হিসেবে থাকবেন এবং তার শরিয়ত বাস্তবায়ন করবেন। কারণ রাসূল (সা.) এর পর আর কোনো নবী আসবেন না।
শারহু সহিহ মুসলিম ২/১৯০; ফাতহুল বারী ৬/৪৯১; লাওয়ামেউল আনওয়ার ২/১১৩
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم